শহরের নির্ধারিত আয়ের মানুষ খুব বেশি চাপে আছে: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

শহরের নির্ধারিত আয়ের মানুষ খুব বেশি চাপে আছে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। তিনি বলেছেন: গ্রামের মানুষ যারা উৎপাদন করে তারা কিন্তু শহরের ফিক্সড ইনকামের লোকের চেয়ে ভালো আছে। গ্রামে যারা অটো চালায় তারাও কিন্তু একটা গরু বা ছাগল পালন করে। বিকেল বেলা একটু খেতে যায় শস্য দেখতে। তাদের কিন্তু মাল্টিপল ইকনোমিক অ্যাক্টিভিটি আছে।

বুধবার (২৬ জুন) সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে ‘বিএসআরএফ সংলাপ’ অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন।

মানুষের কাছে টাকা আছে দাবি করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, গত তিন মাসে দুই বিলিয়ন করে রেমিট্যান্স এসেছে। যেটা পয়েন্ট টু পয়েন্ট ৩৮ শতাংশ গত বছরের এই সময় থেকে বেশি। এই পুরো দুই বিলিয়নই কিন্তু একেবারে গ্রামের অর্থনীতিতে গিয়ে হিট করে। এই রেমিট্যান্সটা শহরে আসে না, কোনো ব্যাংকে আসে না, গ্রামে চলে যায়। গ্রামের ওই সাধারণ মানুষটির ক্রয়ক্ষমতা এটার কারণেও বাড়ে।

আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন: উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হলে আমাদের স্বল্পোন্নত দেশের সুবিধাগুলো যেন অব্যাহত থাকে সেজন্য ডব্লিউটিওসহ বিভিন্ন জোটের সঙ্গে, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তিগুলো করছি। ইউরোপীয় ইউনিয়নে কোটা ফ্রি, ডিউটি ফ্রি সুবিধা যেন অব্যাহত থাকে সেই ব্যাপারে আমরা কাজ করছি।

যোগ করেন: নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশের সঙ্গে দ্রুত কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট করবেন। চীনের সঙ্গে আমাদের স্টাডি সম্পূর্ণ হয়েছে, চায়না একটি এফটিএ করার জন্য উদ্যোগী। আসিয়ান কান্ট্রিগুলোর সঙ্গেও আমাদের যোগাযোগ বৃদ্ধি করেছি।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন: টিসিবির পণ্য বিক্রি নির্দিষ্ট স্থানে দোকানভিত্তিক কীভাবে করা যায়, দিনের শেষে লাইনে না দাঁড়িয়ে কার্ডটি দেখিয়ে একটি নির্দিষ্ট দোকান থেকে বাড়িতে যাওয়ার সময় যেন জিনিসটা নিয়ে যেতে পারেন। সারাদেশে প্রায় আট হাজারের মতো ডিলার রয়েছে। তাদের নির্দিষ্ট দোকানে আনা কষ্টসাধ্য। সেটি আমরা পর্যায়ক্রমে করে যাচ্ছি। কার্ডটাকে আমরা স্মার্ট করে দিচ্ছি।

মন্ত্রণালয়ের দপ্তরগুলোতে গতিশীলতা আনার চেষ্টা করা হচ্ছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন: ট্যারিফ কমিশনকে আমরা ঢেলে সাজাতে চাচ্ছি। আমরা যখন উন্নয়নশীল দেশের দিকে যাবো ডব্লিউটিও’র রুলস অনুযায়ী আমদানিতে প্রতিবন্ধকতা রাখতে পারবো না। অন্যের মার্কেট পেতে চাইলে আমাদের মার্কেট ওপেন করতে হবে। তখন আমাদের ট্যারিফ রেশনালাইজ করতে হবে। সেটা করতে হলে আমাদের ট্যারিফ কমিশনকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।

এবারও ব্যবসায়ীরা চামড়া কেনেননি, চামড়ার দাম পাওয়া যায়নি- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে প্রতিমন্ত্রী বলেন: চামড়ার ব্যাপারে প্রতি বছরই হয়, আমিও দেখি। কিন্তু দায়িত্ব নেওয়ার পর এটা আমাদের প্রথম বছর ছিল। আমরা চামড়ার দাম নির্দিষ্ট করে দিয়েছিলাম- ঢাকার বাইরে একটি গরুর লবণযুক্ত চামড়া এক হাজার টাকা আর ঢাকায় এক হাজার ২০০ টাকা। আমরা এটা মনিটরিং করবো। মনিটরিং করে যে গ্যাপগুলো আছে সে গ্যাপগুলো যেন আগামী বছর পূরণ হয় সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।

আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ৬৪ জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোন জেলায় কত চামড়া কেনা হলো, কতগুলো সংরক্ষিত, কতগুলো অবিক্রিত- সেই বিষয়ে একটা পরিসংখ্যান নেবো। তবে এ বিষয়ে লাইন মিনিস্ট্রি হলো শিল্প মন্ত্রণালয়। এক্ষেত্রে আমরা শুধু মনিটরিংই করতে পারি, কাউকে কেনায় বাধ্য করা হলো শিল্প মন্ত্রণালয়ের কাজ, এর সঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয় যুক্ত রয়েছে। সমন্বয়টা আমরা করবো, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলবো।