৬ দিনের রিমান্ডে মোস্তাফিজ-ফয়সাল

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার আসামি মোস্তাফিজুর রহমান ও ফয়সাল আলীর ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতাউল্লাহের আদালত এ আদেশ দেন।

এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান তাদের ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে গোয়েন্দা প্রধান হারুন অর রশীদ বলেন: মোস্তাফিজ ও ফয়সাল হত্যার কাজ শেষ করে দেশে ফিরে শাহীনকে ফোন করে। বলে আমরা কোথায় থাকব। তখন শাহীনের একটা বাসা আছে বসুন্ধরায়। সেখানে তারা যায়। সেখানে গিয়ে শিমুল ভূঁইয়ার সঙ্গে কথা বলতে বলতে ফোন বন্ধ হয়ে যায়। ফয়সাল ও মোস্তাফিজ ছিল ট্রাক ড্রাইভার। তাদের ৩০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। মোবাইল বন্ধ করে তারা চলে যায় খাগড়াছড়ির গহীন অঞ্চলে। সেখানে সীতাকুন্ড পাহাড়ের নিচে পাতাল কালীমন্দির আছে। সেখানে তারা নিজেদের নাম বদলে ফেলেন। ফয়সাল পলাশ রায় আর মোস্তাফিজুর শিমুল রায় নাম ধারণ করে হিন্দু সেজে মন্দিরে অবস্থান করেন। বলেন, মা’কে তারা খুব ভালোবাসেন। কালীমন্দির ছাড়া থাকতে পারি না। তারা চুলের ধরণ পরিবর্তন করেন, ধূতি পরেন।

এরআগে বুধবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) খাগড়াছড়ির পাতাল কালী মন্দিরের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় হেলিকপ্টার দিয়ে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে। তারা সনাতন ধর্মাবলম্বী সেজে ২৩ দিন ওই কালী মন্দিরে অবস্থান করেছিলেন।

সেসময় হারুন অর রশীদ বলেন, মঙ্গলবার খবর পাওয়া যায় খাগড়াছড়ি দুর্গম পাহাড়ে লুকিয়ে রয়েছে পলাতক ফয়সাল ও মোস্তাফিজ। খবর পেয়ে ডিবির একটি টিম আগেই পাহাড়ে গিয়ে অভিযান শুরু করে। পরে বুধবার হেলিকপ্টারের মাধ্যমে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করি। অজ্ঞান করার জন্য সংসদ সদস্য আনারের নাকে ক্লোরোফরম দেন ফয়সাল। আর মোস্তাফিজ আনারকে উলঙ্গ করে চেয়ারে বেঁধে রাখেন। শিমুল ভূঁইয়ার মূল দুই সহযোগী ছিলেন গ্রেপ্তার ফয়সাল ও মোস্তাফিজ।

গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়ে নিখোঁজ হন সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম। ২২ মে কলকাতা পুলিশ জানায়, আনোয়ারুল খুন হয়েছেন। একই দিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানও জানান, আনোয়ারুল আজিমকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।

এ ঘটনায় একই দিন আনোয়ারুলের খোঁজ চেয়ে রাজধানীর শেরে বাংলা নগর থানায় মামলা করেন তার মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন। আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত শুরুর পর আসতে থাকে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য।